নিজস্ব সংবাদদাতা মালদা: সাংবাদিকের ছদ্মবেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বন্দুকবাজকে কুপোকাত করেছিলেন পুলিশ অফিসার। মালদার মুচিয়া স্কুলের ঘটনায় এমনই পরিকল্পনা করেছিলেন জেলা পুলিশের ডিএসপি ( ডি, অন, টি) আজহারউদ্দিন খান। আর এই সাহসিকতার জন্য মালদা মার্চেন্ট চেম্বার্স অফ কমার্স এর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জানানো হলো উনাকে। সংবর্ধনা সভায় উপস্থিত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী সহ বিশিষ্টদের উপস্থিতে তার এমনই বিচক্ষণতার কথা জানালেন মালদা পুলিশের ডিএসপি।
তিনি বলেন, মুচিয়ার চন্দ্রমহন স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ক্লাসে ঢুকে পড়ে বন্দুকবাজ যখন ছাত্রছাত্রীদের ভয় দেখাচ্ছে পিস্তল, পেট্রোল বোমা ও এসিডের বোতল নিয়ে, সেই খবর আমাকে জেলা পুলিশ সুপার প্রথমে দেন। এবং তৎক্ষণাৎ ঘটনার স্থলে পৌঁছেতে বলেন। দেরি না করে, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি বাইরে প্রচুর মানুষের জমায়েত পুলিশের পোশাক পরে ভেতরে ঢুকতে গেলেই বিপদ আরো বাড়তে পারে এই পরিস্থিতি বোঝার পরেই বিকল্প পরিকল্পনা শুরু করি স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে একটি টি শার্ট ও হাওয়াই চপ্পল চেয়ে নিয়ে নিজের ইউনিফর্ম চেঞ্জ করে সেগুলো পড়ে। পাঁচিল টপকে ভেতরে উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে আমি মিশে যাই। সাংবাদিকরা যখন সেই বন্দুকবাজের ছবি ও বক্তব্য করছিলেন আমিও তাদের সাথে মিশে গিয়ে তার ছবি করি এবং তার মোটিভ নজর করি। দেরি না করে সেই সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য সেখানে অন্য পুলিশ কর্মীদের এলার্ট করে দিই। তাদেরকে বলি, আমি যখন ওই বন্দুক ধারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বো তারপরেই তোমরা আমাকে কভার করবে। সেই মত তারা সবাই স্কুলের পেছনের পাচিল টোপকে ঢুকে পড়ে। বিষয়টাকে বেশিক্ষণ ধরে ফেলে না রেখে এই পরিকল্পনা করে ফেলি। তারপরেই শুরু হয় অপারেশন।
অন্য মনস্কতার সুযোগ বুঝে আমি ঝাঁপিয়ে পড়ি ওই বন্দুক বাজের উপর। আমি যেমন প্রাণে বেঁচেছি সাথে সাথে ওই ক্লাসের স্টুডেন্ট গুলো কেউ আমি বাঁচাতে পেরেছি। এর জন্য উপর ওয়ালা কাছে আমি কৃতজ্ঞ। সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও আমাকে সহযোগিতা করেছেন। খানিকটা আবেগ তাড়িত হয়ে এক নিঃশ্বাসেই কথাগুলো বলে যাচ্ছিলেন এই অফিসার। উপস্থিত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষিকা ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্টরা মুগ্ধ হয়ে শুনছিলেন উনার কথা। সভায় উপস্থিত মানুষের প্রবল হাততালির মধ্যে দিয়ে উনাকে সম্মান জানান এবং সংবর্ধনা জানানো হয় এমন কাজের জন্য মার্চেন্ড চেম্বার এর পক্ষ থেকে।